[New] জায়গিরদারি সঙ্কট ব্যাখ্যা কর [Jagirdari crisis of Mughal Empire] | Nana Ronger Itihas। PDF [Download]

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

 Explain the Jagirdari the crisis was inevitable? 
write a short note on the Jagirdari crisis. 
Jagairdari System. 
What was the jagirdari crisis explain its political impact? 
Jagirdari crisis of Mughal Empire. 
জায়গিরদারি সঙ্কট ব্যাখ্যা কর। 
জায়গিরদারি সঙ্কটে রাজনৈতিক প্রভাব ব্যাখ্যা কর। 
মোঘল সাম্রাজ্যের জায়গিরদারি সঙ্কট ব্যাখ্যা কর।

উত্তর:-  মুঘল যুগে ভূমি রাজস্ব ব্যবসার অঙ্গ হিসেবে আকবর পরবর্তী যুগে ক্রমশ জায়গিরদারী ব্যবস্থা শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং ঐতিহাসিক সতীশচন্দ্র মোগল সাম্রাজ্যের পতনের জন্য জায়গিরদারী ব্যবস্থাকে বহুলাংশে দায়ী করেছেন। সতীশচন্দ্রের মতে, মুঘল যুগের শেষ দিকে জায়গিরদারী সংকট এক গভীর সংকটে পরিণত হয় এবং এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মোগল শাসন ব্যবস্থা, কৃষি ব্যবস্থা ও অর্থনীতি। জায়গিরদারী সংকটের ফলে বিশাল সাম্রাজ্যে ভূমি সংকট দেখা দেয়। অর্থাৎ উচ্চপদস্থ রাজ কর্মচারীগণ তাদের বেতন প্রাপ্তি সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে জায়গীর প্রাপ্তির জন্য আবেদন ও আরজি জানাতে থাকে, যার ফলে জায়গীরদার দের জমি ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ কৃষি ব্যবস্থাকে এক গভীর সংকটের মধ্যে ঠেলে দেয়। সংকট সময়ে গতিপথে মোগল সাম্রাজ্যের অভ্যন্তরীণ অবক্ষয় ও পতন সুনিশ্চিত করে তোলে।
মুঘল যুগের কৃষি জমির যে অংশ সরকারের অধীনে থাকতো তা ‘খালিশা’ জমি নামে পরিচিত ছিল। ‘খালিশা’ জমি থেকে রাজস্ব আদায় কারিরা ভূমি রাজস্ব সংগ্রহ করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিত। তবে ‘খালিশা’ ভূমি কোন দিন জায়গীরদার ভুক্ত হত না। মোগলদের শাসনকালে ‘খালিশা’ জমি বহির্ভূত সাম্রাজ্যে অবশিষ্ট জমি ‘বরাত’ নামে অভিহিত হত। কারণ ওই জমি মনসবদার ও উচ্চপদস্থ মনসবদারি সম মর্যাদা সম্পন্ন রাজ কর্মচারীদের মধ্যে বেতনের পরিবর্তে বন্টন করে দেওয়া হত। এক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে, সম্রাট আকবর মনোনীত মনসবগণ একমাত্র সীমান্ত অঞ্চল ব্যতীত জায়গীর পেতেন না। অন্যান্যদের নগদে অর্থ প্রদান করা হত। কিন্তু পরবর্তীকালে জাহাঙ্গীর, শাহজাহান ও ঔরঙ্গজেবের সময়ে ক্রমশ মনসবদারগণ জায়গীর এর অধিকারী হন। 1707 খ্রিস্টাব্দের পর থেকে অবক্ষয়িত রাষ্ট্র ব্যবস্থার উচ্চপদস্থ রাজ ও কর্মচারী মনসবদারের লক্ষ হয়ে দাঁড়ায় সমৃদ্ধি অঞ্চলে জায়গীর প্রাপ্তি। জায়গীর হিসেবে বন্টিত জমির বাইরে ‘বরাত’ জমির আরও অংশ ছিল সে গুলোকে বলা হত ‘মথল-ই-পাইবাকি’ সময়ান্তরে জায়গীর প্রাপ্তির লক্ষ্যে মনসবদার গণের চাপ বৃদ্ধি পেলে ‘মথল-ই-পাইবাকি’ কিংবা ‘বরাত’ জমির অবশিষ্টাংশ থেকেও জায়গীর দেওয়া শুরু হয়। এর ফলে উচ্চাকাঙ্ক্ষী মনসবদার ও রাজকর্মচারীদের চাপে দেখা দেয় ভূমি সংকট তথা কৃষি সংকট।
সম্রাট শাহজাহানের সময় থেকে জায়গীর বন্টন কে কেন্দ্র করে জমির অভাব ও সংকট প্রকটিত হতে শুরু করে। সম্রাট ঔরঙ্গজেব জায়গিরদারী সংকট নিরসনে তিনি কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি। সরকারের রাজস্ব মন্ত্র জাইগীরদের অধীনে জমি রাজস্ব যে পরিমাণ নির্ধারণ করতেন যা জমি অনুযায়ী নির্ধারিত এই রাজস্ব কে বলা হত ‘জমা’ এবং আদায় কৃত রাজ্য সরকারের রাজস্ব কে বলা হত ‘হাসিল’ এর পরিমান অত্যাধিক বাড়িয়ে দিলেও বাড়তি অর্থ রাজকোষের জমা পরতো না।
অনেক সময় দেখা গিয়েছে ‘হাসিল’ এর পরিমান জমার পরিমাণ কে ছাপিয়ে যেত। এর কুফল প্রকটিত হয়েছিল দুদিকে— প্রথমত, রাষ্ট্র বাড়তি রাজস্বের ভাগ থেকে বঞ্চিত হয়েছিল এবং দ্বিতীয়ত, কৃষকের ওপর অতিরিক্ত রাজস্বের চাপ বৃদ্ধি পাওয়াতে বহু কৃষক আত্মরক্ষার তাগিদে বনাঞ্চলে পালিয়ে যেত। এর ফলে শুরু হয়েছিল অবকৃষকায়ণ ও‌ কৃষি সংকট মোগল সাম্রাজ্যের অর্থনৈতিক সংকট কে ত্বরান্বিত করেছিল।এর পাশাপাশি কৃষকদের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ মোঘল সাম্রাজ্যের পক্ষে ছিল অশনি সংকেত।
ঔরঙ্গজেবের সময় থেকে জায়গিরদারী সংকট প্রকটিত হওয়ার সুযোগে মোগল দরবারের সর্বস্তরের মনসবদার ও উচ্চপদস্থ রাজকর্মচারী যথা সৈয়দ, ইরানি, তুরানি, রাজপুত, মারাঠা, আফগান প্রভৃতি সকল গোষ্ঠী জায়গীর সৃষ্টির লক্ষ্যে চাপ সৃষ্টি করে। বিজাপুল ও গোলকুণ্ডা অধিকৃত হওয়ার পর সেখানকার অভিজাত গোষ্ঠী জায়গীর পাওয়ার জন্য উদগ্রীব হন। তাদের অনেকেই অনুর্বর জমি নিতে অস্বীকার করলে দক্ষিণ ভারতের বাইরে তাদের জায়গীর দেওয়া হত। ফলে সেই সকল অঞ্চলে জায়গীর বন্টনের বাড়তি অসুবিধের সৃষ্টি হয়। ‘তারিখ-ই-ঔরঙ্গজেব’ গ্রন্থের লেখক আবুল ফজল মাসুলি দেখিয়েছেন এ সময় খান জাত অভিজাতদের জায়গীর প্রদান করা প্রায় অসম্ভব ছিল বর্ণনা দিয়েছেন।
জায়গীর প্রাপ্তির লক্ষ্যে চাপ বৃদ্ধি পেলে শেষ পর্যন্ত পূর্বতন জায়গীর গুলিকে কয়েকটি খণ্ডে ভাগ করলে নতুন জায়গীরদার দের অধীনে জমির পরিমাণ কমে যায় যার ফলে প্রতিটি জায়গীরদার কম জমি থেকে বেশি কর আদায়ের লক্ষে কৃষকদের ওপর অত্যাচার শুরু করে। বলাবাহুল্য এই অত্যাচার নিপীড়ন এর ফলে কৃষকদের জীবন এক গভীর সঙ্কটে নিক্ষিপ্ত হয়।
বেশি সংখ্যক জায়গীরদার দের মধ্যে ‘বরাত’ জমি বন্টনের ফলে জায়গীর হিসেবে দেওয়ার মতো ‘মথল-ই-পাইবাকি ‘ জমিও শেষ হয়ে যায়। ফলে জায়গীরদার দের খুশি করার জন্য খালিশা জমি থেকে জায়গীর দেওয়া শুরু হয়। অধ্যাপক এন. এ. সিদ্দিকী ও বকসি এনায়েতুল্লাহ প্রমুখগণ ঔরঙ্গজেব পরবর্তী যুগে মোগল বাদশাহ দের কার্যকলাপ বর্ণনা করে এই সংকটকে আরো জটিল ও গভীরতর করে তুলেছিল বলে মনে হয়। মুঘল দরবারে সৈয়দ, ইরানি, তুরানি ও আফগান মনসবদারগণ ও রাজকর্মচারীদের মধ্যে জায়গীর পাওয়ার জন্য পারস্পরিক দ্বন্দ্ব শুরু হয়। ফলে পরিস্থিতি আরো জটিল আকার ধারণ করে। এই জটিলতার ফলশ্রুতিতে অযোগ্য বাদশাহীগণ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করত না। ফলে ভূমি রাজস্ব ব্যবস্থার দায়িত্ব জ্ঞানহীন লোভী মনসবদার ও উচ্চপদস্থ কর্মচারীদের হাতে চলে যায়। স্বাভাবিক ভাবে বলা যায় এর কুফল অবকৃষকায়নকে ত্বরান্বিত করেছিল। বৃদ্ধি পেয়েছিল কৃষকদের সীমাহীন দুরবস্থা। ইউরোপীয় পর্যটক বার্নিয়ার লিখেছেন–
‘একজন মোগল জায়গীরদার এর উদ্দেশ্য ছিল জমি থেকে যতটা সম্ভব লুটে নেওয়া যায়। তার জন্য যদি কৃষকরা স্থান ত্যাগ করে চলে যেতো কিংবা অনাদায়ে মারা যেত তবুও জায়গীরদার দের কিছু যায় আসতো না।’
জায়গিরদারী সংকটের ফলশ্রুতিতে বহু ক্ষেত্রে কৃষক বিদ্রোহ হয়ে ওঠে। কৃষকদের পালান বন্ধের জন্য জায়গীরা ‘হকেয়া’ প্রথার ব্যবস্থা করেন, এই প্রথম অনুযায়ী পালানো চাষীকে বেঁধে চাবুক মারা হতো এবং ফিরিয়ে আনা হত। তাছাড়া বিদ্রোহী চাষিরদের মারাধর, লুণ্ঠন করা হত এবং তার স্ত্রী-পুত্র দের ক্রীতদাস হিসেবে বাজারে বিক্রি করা হত। এই পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে জনৈক ঐতিহাসিক লিখেছেন –“চাষীদের উপর নিষ্ঠুর আচরণের চরম ব্যাখ্যা দিলেও প্রকৃত পরিস্থিতির মাত্র এক শতাংশ হবে।” অর্থাৎ কৃষকদের ওপর অত্যাচার ছিল অবর্ণনীয়। বহুলাংশে এই পরিস্থিতি মোগল সাম্রাজ্যের পতন সুনিশ্চিত করেছিল।

মধ্য ভারতের ইতিহাসের অন্যান্য বড় প্রশ্ন উত্তরঃ-

1. সুলতানীর পতন ও মোঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা

2. ইলতুৎমিসের কীর্তি

3. সুলতানি যুগের স্থাপত্য

4. ভক্তি আন্দোলন

5. শেরশাহের শাসন ব্যবস্থা

6. শিবাজীকে কি মধ্যকালিন ভারতের সর্বশ্রেষ্ট

7. দাক্ষিণাত্য ক্ষত

8. আলাউদ্দিন খিলজি বাজারদর নিয়ন্ত্রণ

9. আকবরের রাজপুত নীতি

10. 

Leave a Reply