[New] সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সান্তালহুল । Nana Ronger Itihas

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

 

সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সান্তালহুল  

সাঁওতাল বিদ্রোহ বা সান্তাল হুল এর সূচনা হয় ১৮৫৫ সালে পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ও বিহারের ভাগলপুর জেলায়। ইংরেজ আমলে স্থানীয় জমিদার, মহাজন ও ইংরেজ কর্মচারীদের অন্যায় অত্যাচারের শিকার হয়ে সাঁওতাল সমাজ ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তোলেন। এটি ছিল ইংরেজদের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র গণসংগ্রাম। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয় সিদো ও কানু মুর্মু নামে দুই  ভাই, যাঁরা বাবা তিলকা মাঝির ভাবশিষ্য ছিলেন।
 ১৮৫২ সালে লর্ড কর্নওয়ালিশের প্রবর্তিত চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের ফলে তাঁদের উপর অত্যাচার বেড়ে গিয়েছিল। তাই সিপাহী বিদ্রোহেরও আগে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সাঁওতালী সমাজ সোচ্চার হয়েছিল।
১৮৫৫ সালে সাঁওতালী সমাজ সশস্ত্র সংগ্রাম করেছিলেন তাঁদের অধিকার আদায়ের জন্য। তাঁরা এ যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন ইংরেজদের শাসন-শোষণ, সুদখোর, মহাজন ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। সান্তাল হুলের ইতিহাস হতে জানা যায় দামিন-ই কোহ ছিল সাঁওতালদের নিজস্ব গ্রাম, নিজস্ব দেশ।
১৮৫৫ সালের ৩০ জুন যুদ্ধ শুরু হয়। ঐ দিন বীর সেনানী সিদো কানহুর নেতৃত্বে জনজাতীয় সমাজ অত্যাচারী ব্রিটিশ শাসক ও তাদের অনুগামী জমিদার/সুদখোর মহাজনদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন।
এরপর শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম। তৎকালীন এক ব্রিটিশ পর্যবেক্ষকের মতে, সাওতাঁলী বীরযোদ্ধাদের কাছে পরাজয় বলে কোনো শব্দ ছিল না, যতক্ষণ যুদ্ধক্ষেত্রে বিজয়সূচক দামামা বেজেছে, এক একজন যোদ্ধা লড়াই করে গেছেন, শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে। তবে, সাওতাঁলী বীর যোদ্ধাগণ তীর-ধনুক ও দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করলেও ইংরেজ বাহিনীর হাতে ছিলো বন্দুক ও কামান। যদিও, সাঁওতাল বিদ্রোহের লেলিহান শিখা বৃটিশ সরকারের মসনদ কাঁপিয়ে দিয়েছিল, তবুও  এই অসম যুদ্ধে সিদো-কানহু সহ অন্যান্য নেতৃবর্গের পর্যায়ক্রমিক আত্মবলিদানে আন্দোলন দুর্বল হয়ে যায় এবং ১৮৫৬ সালের নভেম্বর মাসে তা শেষ হয়। বিদ্রোহের পরিসমাপ্তি ঘটে।

Leave a Reply