ওয়াহাবি আন্দোলন | Wahhabi movement | ওয়াহাবি আন্দোলন – History Notes PDF [Dwonload]

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now




 

প্রশ্ন:-  ওয়াহাবি আন্দোলন
অথবা, ওয়াহাবি আন্দোলন সম্পর্কে যা জানো ব্যাখ্যা করো।
অথবা, ওয়াহাবি আন্দোলনের ভারতের নেতৃত্ব কারা দিয়েছিলো? এই আন্দোলনের লক্ষ্য কী ছিল এবং এই আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণ আলোচনা করো?
অথবা, ওয়াহাবি আন্দোলনের ব্যর্থতার কারণ আলোচনা করো?
অথবা, ওয়াহাবি আন্দোলন অবনতির কারণগুলি ব্যাখ্যা দাও।



উত্তর :- 

উদ্ভব: 

ওয়াহাবি শব্দের অর্থ ‘নবজাগরণ’। ইবন আব্দুল ওয়াহাবের নাম অনুসারে এই আন্দোলনের নামকরণ করা হয়। এই আন্দোলনের সূত্রপাত হয় আরবে। হজরত মহম্মদের বিশুদ্ধ ইসলাম ধর্মের যথাযথ প্রবর্তন ও পৌত্তলিকতার বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে ইসলামের পুনরুজ্জীবনই এই আন্দোলনের মূল কথা।


ভারতের নেতৃত্ব:

দিল্লি অঞ্চলে তারিকা-ই-মহম্মদীয়া নামে পরিচিত এই ওয়াহাবি আন্দোলনের সূত্রপাত করেন সাধক ওয়ালী উল্লাহ। তাঁর ছেলে আব্দুল আজিজ এবং উত্তর প্রদেশ অন্তর্গত রায়বেরিলির সৈয়দ আহমদ শাহ এই আন্দোলনের প্রসারে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন।


লক্ষ্য:

সৈয়দ আহম্মদকে, বলা যেতে পারে, এই আন্দোলনের পথিকৃৎ। বিধর্মী শিখ ও ইংরেজ শাসন কে পরাস্ত করে এই দেশে ওয়াহাবীদের নেতৃত্বে পুনরায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠায়ই ছিল সৈয়দ আহম্মদের রাজনৈতিক লক্ষ্য। তাছাড়া ভারতে ব্রিটিশ উপনিবেশিক অর্থনীতি প্রযুক্ত হওয়ায় এখানকার নিম্নবর্গের মুসলমানরা চরম অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। এই সংকট মোচনের জন্য ব্রিটিশ শাসনের অবসানের জন্য আন্দোলনের অন্যতম অর্থনৈতিক লক্ষ্য স্থির হয়। আর ইসলাম ধর্মের বিশুদ্ধতা বজায় ছিল ওয়াহাবী আন্দোলনের অন্যতম ধর্মীয় লক্ষ্য।



আন্দোলন:

ওয়াহাবি আন্দোলনের সদর দপ্তর স্থাপিত হয় উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত প্রদেশের সিত্তানা অঞ্চলে, ১৮২৭ খ্রিস্টাব্দে সৈয়দ আহম্মদ শিখদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। চার বছর যুদ্ধ চালিয়ে তিনি নিহত হন (১৮৩১) । ব্রিটিশরা শিখ শক্তিকে পরাভূত করে পাঞ্জাব দখল করলে ওয়াহাবি আন্দোলন সম্পূর্ণরূপে ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হয় এবং অল্প সময়ের মধ্যে ওয়াহাবিরা সিন্ধু অঞ্চলের নিজেদের শাসন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। যদিও ১৮৪৭ তে ইংরেজ পাঞ্জাব অঞ্চল হতে ওয়াহাবীদের বিতাড়িত করে।


অবনতি:

সামরিক অভিযানে ওয়াহাবীদের পর্যুদস্ত করতে না পেরে তাদের বিরুদ্ধে রাজদ্রোহীতার মামলা রুজু করা হয়। এভাবে আমবালা, পাটনা, মালদা ও রাজমহলের বহু প্রথম পর্যায়ের ওয়াহাবী নেতাদের রাজদ্রোহের অভিযোগে যাবজ্জীবন দ্বীপান্তরে পাঠানো হয়। তাই ১৮৭০ থেকে ওয়াহাবি আন্দোলন কে ক্ষীণবল হতে লক্ষ্য করা যায়।


ব্যর্থতার কারণ:

অধ্যাপক কেয়ামুদ্দিন আহমেদ ওয়াহাবি আন্দোলনের ব্যর্থতার তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন,-

(ক) উপজাতি গুলির বিরোধিতা ও অসহযোগিতা;

(খ) সকল প্রকার প্রয়োজনীয় সমর্থনের জন্য ভারতের দূরবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত তাদের প্রধান ঘাঁটি গুলির উপর অসহায় নির্ভরশীলতা ও 

(গ) উপযুক্ত রসদ ও দ্রব্যসামগ্রীর অভাব।

ওয়াহাবিদের উন্নত সংগঠন ও উৎসাহ-উদ্দীপনার অন্ত ছিল না এ কথা ঠিক বটে; কিন্তু কেবল এগুলি থাকলেই কোন আন্দোলনকে সফল করা যায় না।


অবদান:

প্রথমত: ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে মতাদর্শ গড়ে তোলা।

দ্বিতীয়তঃ প্রথম ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রাম গড়ে তোলা।

Leave a Reply