[New] চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব আলোচনা কর | Chandragupta Maurya [PDF]

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

প্রশ্ন:- একজন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত রূপে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব আলোচনা করো।
অথবা,
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্বের মূল্যায়ন কর।
অথবা,
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব নিরূপণ কর।
অথবা,
রাজ্য বিজেতা ও শাসকরূপে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের অবদান সংক্ষেপে বর্ণনা কর।
অথবা,
চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের রাজত্ব সম্পর্কে একটি প্রবন্ধ লিখ। 

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের কৃতিত্ব আলোচনা কর

 

উত্তর :-

চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য (৩২৪-৩০০ খ্রিঃ পূর্ব) ছিলেন মৌর্যবংশের প্রতিষ্ঠাতা। তাঁর নেতৃত্বে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক গৌরবময় ও যুগান্তকারী অধ্যায়ের সূচনার সঙ্গে সঙ্গে সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার আদর্শ বাস্তব রূপ গ্রহণ করে।
চন্দ্রগুপ্ত প্রথমে নন্দবংশের সম্রাট ধননন্দকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। কিংবদন্তী থেকে জানা যায় যে, চন্দ্রগুপ্তের পিতা ধননন্দের হাতে নিহত হয়েছিলেন। সেই হত্যার প্রতিশােধ নেবার জন্য চন্দ্রগুপ্ত চাণক্য নামে এক ব্রাক্ষ্মণের সাহায্য নেন। সম্মুখ যুদ্ধে নন্দসেনাপতি ভদ্রশাল পরাজিত হন।
কৃতিত্ব:- তিনটি বিষয়ে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের উল্লেখযােগ্য কৃতিত্ব ছিল, যেমন : 
প্রথমত, তিনি নন্দবংশের উচ্ছেদ করেছিলেন।
দ্বিতীয়ত, উত্তর-পশ্চিম ভারতে বিদেশি গ্রীক শাসনের অবসান ঘটিয়েছিলেন। 
তৃতীয়ত, এই দুইটি প্রাথমিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করে তিনি সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন।
 
 
(১) গ্রীক আক্রমণ প্রতিহতকরণ : মগধের সিংহাসন দখল করার পর চন্দ্রগুপ্ত গ্রীক আক্রমণের সম্মুখীন হলেন। গ্রীক সেনাপতি সেলুকাস পাঞ্জাব ও সিন্ধুদেশ চন্দ্রগুপ্তের হাত থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য এক বিশাল সৈন্যবাহিনী নিয়ে অভিযান শুরু করলে (৩০৫ খ্রিঃপূর্ব) চন্দ্রগুপ্ত তাঁকে বাধা দেন এবং সেলুকাস পরাজিত হন। অবশেষে সেলুকাস এক সন্ধি সম্পাদন করেন। এই সন্ধির শর্ত অনুসারে সেলুকাস চন্দ্রগুপ্তকে হিরাট, কাবুল, কান্দাহার ও মাকরাণ এই চারটি প্রদেশ ছেড়ে দেন এবং চন্দ্রগুপ্ত সেলুকাসকে ৫০০ রণহস্তী উপহার দেন।
এছাড়া দুই পক্ষের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয় এবং চন্দ্রগুপ্ত সেলুকাসের কন্যাকে। বিবাহ করেন। সম্প্রীতির নিদর্শন স্বরুপ সেলুকাস চন্দ্রগুপ্তের রাজসভায় মেগাস্থিনিস নামে এক গ্রীক রাষ্ট্রদূত পাঠান। মেগাস্থিনিসের ভারত সম্পর্কে লিখিত বিবরণ ইন্ডিকা’ নামে পরিচিত।
 
 
(২) সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা : চন্দ্রগুপ্ত মগধের সাম্রাজ্যসীমা ভারতের প্রায় সর্বত্র প্রসারিত করেন। গিরণর শিলালিপি থেকে জানা যায় যে তিনি গুজরাট, অবন্তী ও মালব পদানত করেছিলেন। মহারাষ্ট্র ও কোঙ্কন অঞলও তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। দক্ষিণে গােদাবরী নদী অতিক্রম করে তিনি মহীশূর ও মাদ্রাজের তিনেভেলী পর্যন্ত অগ্রসর হন। ঐতিহাসিক ডঃ রাধাকুমুদ মুখ্যোপাধ্যায় চন্দ্রগুপ্তকে “প্রথম ঐতিহাসিক সর্বভারতীয় সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতা” বলে অভিহিত করেছেন। প্লটার্ক, জাস্টিন প্রমুখ বিদেশি লেখকদের বিবরণে চন্দ্রগুপ্তকে এক বিশাল সাম্রাজ্যের স্থপতি রূপে বর্ণনা করা হয়েছে।
 
 
(৩) শাসক হিসেবে কৃতিত্ব : চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য শুধুমাত্র দিগ্বিজয়ী বীর ছিলেন না, দক্ষ শাসক হিসাবেও যথেষ্ট কৃতিত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন। একদিকে তিনি যেমন রাজচক্রবর্তীর আদর্শকে বাস্তবায়িত করেছিলেন, অন্যদিকে একটি সুনিয়ন্ত্রিত শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে বিশাল সাম্রাজ্যকে সুদৃঢ় করেন। কৌটিল্যের অর্থশাস্ত্র থেকে জানা যায় যে, চন্দ্রগুপ্ত কীভাবে এক সুনিয়ন্ত্রিত শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলেছিলেন।
 
 
শাসনব্যবস্থার কেন্দ্রবিন্দু ছিলেন সম্রাট। স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার অধিকারী হয়েও চন্দ্রগুপ্ত জনকল্যাণের লক্ষ্য থেকে সরে আসেন নি। মেগাস্থিনিসের বিবরণে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের সময়ে রাজধানী পাটলিপুত্রের শাসন কাঠামাে, রাজস্ব ব্যবস্থা, সামরিক বিভাগ প্রভৃতি সম্পর্কে তথ্যাদি জানা যায়।
 
নানা রঙের ইতিহাসে স্বাগতম। পাঠকের জন্য শুভকামনা। এই নোটটি ইতিহাস অনার্স ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আদর্শ নোট। এই নোটটি নির্দ্বিধায় পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য ব্যাবহার করতে পারেন। 
আমরা ইতিহাস নিয়ে কাজ করে থাকি। ইতিহাস নিয়ে কোন প্রশ্ন নিয়ে আমাদের সাথে আলোচনা করতে, আমাদের Whasapp Group & Telegram Channel এ যোগ দিন।

Leave a Reply