অযোধ্যার রাম মন্দির সম্পর্কিত কিছু তথ্য

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now
Instagram Group Join Now

রাম মন্দির সম্পর্কিত কিছু জানা-অজানা তথ্য

আজ সেই অপেক্ষিত রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠা, আবেগে ভাসছেন সারা ভারতবাসী। এ-ই মন্দিরের বিশেষ কিছু তথ্য,ইতিহাস চলুন জেনে আসা যাক

অযোধ্যার রাম মন্দির হিন্দু ধর্মের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। এটি বিশ্বাস করা হয় যে এই মন্দিরটিতে হিন্দু দেবতা রাম জন্মগ্রহণ করেছিলেন। রাম একটি জনপ্রিয় হিন্দু দেবতা যিনি রামায়ণ মহাকাব্যের কেন্দ্রীয় চরিত্র। তিনি একজন ধার্মিক এবং ন্যায়বান রাজার প্রতীক।

রাম মন্দির নির্মাণের জন্য হিন্দুরা শতাব্দী ধরে লড়াই করে আসছে। ২০১৯ সালে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে একটি রায় দেয়। এরপর, রাম মন্দির নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্ট গঠিত হয়। ২০২৩ সালের ২৬শে ডিসেম্বর, রাম মন্দির উদ্বোধন করা হয়।

রাম মন্দির একটি বিশাল এবং সুন্দর মন্দির। এটি সাদা মার্বেল দিয়ে তৈরি। মন্দিরের গঠন ঐতিহ্যবাহী হিন্দু স্থাপত্য শৈলী অনুসরণ করে। মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বারটি একটি বিশাল তোরণ দিয়ে সজ্জিত। মন্দিরের ভিতরে, রাম এবং তার স্ত্রী সীতার মূর্তি রয়েছে।

রাম মন্দির হিন্দুদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ হিন্দু তীর্থযাত্রী এই মন্দির দর্শন করতে আসেন। রাম মন্দির ভারতের সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় ঐতিহ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

রাম মন্দির নির্মাণের ইতিহাস

রাম মন্দির নির্মাণের ইতিহাস শতাব্দী প্রাচীন। রামায়ণ মহাকাব্য অনুসারে, রাম অযোধ্যার রাজা দশরথের পুত্র ছিলেন। তিনি লঙ্কারাজ রাবণকে পরাজিত করেছিলেন এবং সীতা ও লক্ষ্মণকে উদ্ধার করেছিলেন।

অযোধ্যা ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি শহর। এটি হিন্দুধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান, কারণ এটি রামায়ণের নায়ক রামচন্দ্রের জন্মস্থান হিসাবে বিবেচিত হয়। অযোধ্যায় রাম মন্দির একটি ঐতিহাসিক মন্দির যা রামচন্দ্রের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করা হয়েছে।

রাম মন্দিরটি প্রথম বার ৭ম শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। এটি একটি ছোট মন্দির ছিল। রাম মন্দিরটি পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার ধ্বংস ও পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল।

১৬শ শতাব্দীতে, মুঘল সম্রাট বাবর অযোধ্যায় আক্রমণ করেন। তিনি রাম মন্দিরটি ধ্বংস করে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এই মসজিদের নাম ছিল বাবরি মসজিদ।

২০শ শতাব্দীতে, ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থান ঘটে। হিন্দুরা বাবরি মসজিদকে ভেঙে ফেলতে এবং রাম মন্দির নির্মাণের দাবি জানায়। ১৯৯২ সালে, হিন্দু উগ্রপন্থীরা বাবরি মসজিদ ভেঙে ফেলে।

বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনার পর, রাম মন্দির নির্মাণ নিয়ে হিন্দু ও মুসলমানদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। এই বিরোধের ফলে ভারতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়।

২০১৯ সালে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে একটি রায় দেয়। এরপর, রাম মন্দির নির্মাণের জন্য একটি ট্রাস্ট গঠিত হয়। ২০২৩ সালের ২৬শে ডিসেম্বর, রাম মন্দির উদ্বোধন করা হয়।

রাম মন্দির নির্মাণের কাজ ২০২০ সালে শুরু হয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে, মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। মন্দিরটি ২০২৪ সালে ২২ তারিখ সোমবার উদ্বোধন করা হলো।

মন্দির সম্পর্কিত তথ্য

মন্দিরটি ২৩৫ ফুট চওড়া, ৩৬০ ফুট লম্বা ও ১৬১ ফুট উঁচু। একবার সম্পূর্ণ হলে মন্দির কমপ্লেক্সটি হবে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম হিন্দু মন্দির।

মন্দিরটি উত্তর ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যের গুজরা-চৌলুক্য শৈলীতে নকশা করা হয়েছে। মন্দিরটির প্রধান গর্ভগৃহটি একটি ৪০ ফুট উঁচু স্তম্ভ দ্বারা সমর্থিত। গর্ভগৃহের মধ্যে শ্রীরামের বিগ্রহ স্থাপন করা হবে।

মন্দিরটি নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত উপকরণগুলিও অত্যন্ত বিশেষ। মন্দিরটির জন্য নির্মিত পাথরগুলি ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও, মন্দিরটির জন্য নির্মিত লোহাটি জাপান থেকে আমদানি করা হয়েছে।

মন্দিরটি নির্মাণের কাজ ২০২২ সালের আগস্ট মাসে শুরু হয়েছিল। মন্দিরটি নির্মাণের জন্য একটি বিশেষ প্রকৌশল দল কাজ করছে। মন্দিরটি নির্মাণের কাজ ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

মন্দিরটি নির্মাণের প্রক্রিয়া নিম্নরূপ:

প্রথমে, মন্দিরটির জন্য একটি ভিত্তি নির্মাণ করা হয়। ভিত্তি নির্মাণের জন্য কংক্রিট এবং ইস্পাত ব্যবহার করা হয়।

এরপর, মন্দিরটির স্তম্ভগুলি নির্মিত হয়। স্তম্ভগুলি নির্মাণের জন্য পাথর ব্যবহার করা হয়।

স্তম্ভগুলি নির্মাণের পর, মন্দিরটির দেয়াল এবং ছাদ নির্মিত হয়। দেয়াল এবং ছাদ নির্মাণের জন্য পাথর এবং কংক্রিট ব্যবহার করা হয়।

মন্দিরটির দেয়াল এবং ছাদ নির্মাণের পর, মন্দিরটির অভ্যন্তরীণ অংশগুলি নির্মিত হয়। অভ্যন্তরীণ অংশগুলি নির্মাণের জন্য কাঠ, মার্বেল এবং অন্যান্য উপকরণ ব্যবহার করা হয়


মন্দিরটি নির্মাণের কাজটি একটি জটিল প্রকল্প। মন্দিরটি নির্মাণের জন্য দক্ষ প্রকৌশলীদের একটি দল কাজ করেছে।  ন্দিরটি নির্মাণের কাজটি ২০২৪ সালে শেষ হয়েছে।

বিশেষ ক্ষমতা

মন্দিরটি নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত উপকরণগুলি অত্যন্ত বিশেষ। মন্দিরটির জন্য নির্মিত পাথরগুলি ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়াও, মন্দিরটির জন্য নির্মিত লোহাটি জাপান থেকে আমদানি করা হয়েছে।

মন্দিরটি নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত উপকরণগুলি অত্যন্ত টেকসই। পাথরগুলি হাজার হাজার বছর ধরে স্থায়ী হতে পারে।

মন্দিরটি এমনভাবে নির্মিত হচ্ছে যাতে এটি ভূমিকম্প এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধী হয়।


মন্দিরটিতে মোট ৫০ টি জানালা এবং ৪০ টি দরজা রয়েছে। জানালাগুলি মন্দিরের অভ্যন্তরে আলো প্রবেশ করাতে সাহায্য করবে। দরজাগুলি ভক্তদের প্রবেশ এবং বের হওয়ার জন্য ব্যবহৃত হবে

কী কী আছে?

মন্দিরটির প্রধান গর্ভগৃহটি একটি ৪০ ফুট উঁচু স্তম্ভ দ্বারা সমর্থিত। গর্ভগৃহের মধ্যে শ্রীরামের বিগ্রহ স্থাপন করা হবে।

মন্দিরের অভ্যন্তরে একটি বড় হল রয়েছে যা ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং অন্যান্য অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত হবে।

মন্দিরের চারপাশে একটি বিশাল প্রাঙ্গণ রয়েছে যা ভক্তদের প্রার্থনা এবং ধ্যান করার জন্য ব্যবহৃত হবে।

মন্দিরে সোনারূপা ব্যবহারের পরিমাণ এখনও নির্ধারণ করা হয়নি। তবে, যতটুকু জানা গেছে……. মন্দিরটি নির্মাণের জন্য ব্যবহৃত মোট খরচের প্রায় 10% সোনারূপা ব্যবহার করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

মন্দিরটি নির্মাণের জন্য মোট খরচ প্রায় 500 কোটি টাকা বলে অনুমান করা হচ্ছে। এর মধ্যে সোনারূপার জন্য প্রায় 50 কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।

মন্দিরটিতে সোনারূপা ব্যবহারের মূল উদ্দেশ্য হল মন্দিরটিকে আরও সুন্দর এবং ঐতিহ্যবাহী করে তোলা

মন্দিরটির গর্ভগৃহে শ্রীরামের বিগ্রহের জন্য একটি সোনার সিংহাসন তৈরি করা হয়েছে

মন্দিরের ছাদ এবং দেয়ালে সোনার ও রূপার কাজ করা হয়েছে

মন্দিরের কিছু দরজা এবং জানালাগুলি সোনার।  (বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী)

রাম মন্দির নির্মাণের প্রভাব

রাম মন্দির নির্মাণ ভারতের সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি হিন্দুদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। রাম মন্দির নির্মাণের ফলে ভারতে ধর্মীয় সম্প্রীতির উপর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

রাম মন্দির নির্মাণের ফলে ভারতের রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। রাম মন্দির নির্মাণ হিন্দু জাতীয়তাবাদের উত্থানকে আরও জোরদার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Leave a Reply